করোনায় দুগ্ধ খামারিদের আশার আলো ‘ফিডিং শপ’
করোনায় দুগ্ধ খামারিদের আশার আলো ‘ফিডিং শপ’
বগুড়া সংবাদ ডট কম শাজাহানপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি (জিয়াউর রহমান) : কোভিড-১৯ মহামারির ভয়াবহ দূর্যোগকালীন সময়ে বগুড়া অঞ্চলের দুগ্ধ খামারিদের পাশে দাঁড়িয়েছে বগুড়ার শাজাহানপুুর উপজেলার বেতগাড়ী এলাকায় অবস্থিত সামাজিক ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান গ্রামীণ ডানোন ফুডস লিমিটেড।
করোনার এই দূর্যোগকালীন সময়ে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যসহ গো-খাদ্যের বাজার মূল্য যখন ঊর্ধ্বমূখী তখন ‘ফিডিং শপ’ এর মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে উন্নত মানের দানাদার গো-খাদ্য সরবরাহ খামারিদের মাঝে ব্যাপত সাড়া জাগিয়েছে।
শুধু তাই নয় করোনাকালিন সময়ে দরিদ্র খামারিদের মাঝে খাদ্যসামগ্রী বিতরন এবং করোনায় আক্রান্ত খামারিদের আর্থিক সহায়তা প্রদানের পরিকল্পনায় প্রশংসিত হয়েছে এই প্রতিষ্ঠানটি।
গ্রামীণ ডানোন ফুডস লিমিটেডের ফার্ম ডেভেলপমেন্ট এন্ড মিল্ক সোর্সিং ব্যবস্থাপক ডা. সোহেল জানান, বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলায় নিবন্ধিত গড়ে চারশত জন খামারি কোম্পানীর কাছে দৈনিক দুধ সরবরাহ করে থাকেন। খামার পরিচালনায় সবচেয়ে বেশি খরচ হয় গরুর খাদ্য যোগান দেয়ায়। করোনাকালিন দূর্যোগের সময় খামারিদের খরচ কমাতে কোম্পানীর নিজস্ব তত্বাবধানে ‘ফিডিং শপ’ চালু করা হয়েছে। যেখান থেকে প্রতি কেজিতে ৫-৭ টাকা ভুর্তুকি মূল্যে বাজারের প্রচলিত উন্নত মানের এবং পুষ্টিগুন সম্পন্ন দানাদার গো-খাদ্য খামারিদের মাঝে নগদ ও বাকিতে সরবরাহ করা হচ্ছে। এতে করে খামারিরা লাভবান হওয়ার পাশাপাশি খামার পরিচালনায় আরো বেশি উদ্বুদ্ব হচ্ছেন।
সারিয়াকান্দির কুতুবপুর গ্রামের রফিকুল ইসলাম নামে একজন খামারি জানান, করোনার এই দুঃসময়ে কোম্পানীর ‘ফিডিং শপ’ উদ্যোগ খামার পরিচালনায় আশার আলো জাগিয়েছে। ভুর্তুকি মূল্যে ভালো মানের খাদ্য পাওয়ায় কাংখিত দুধ উৎপাদন করে আর্থিক ভাবে লাভবান হচ্ছেন। খামারিদের কথা বিবেচনা করে ‘ফিডিং শপ’ কার্যক্রম সারাবছর চালু রাখার পরিকল্পনা করলে খামারিরা আরো বেশি উপকৃত হতেন বলেও জানান এই খামারি।
বগুড়া জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. রফিকুল ইসলাম তালুকদার ‘ফিডিং শপ’ এর কার্যক্রমকে সাধুবাদ জানিয়ে বলেন, ভূর্তুকি মূল্যে মানসম্পন্ন গো-খাদ্য সরবরাহ নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবিদার। এতে করে খামারিগন টেকসই উন্নয়নের দিকে এগিয়ে যাবে। পাশাপাশি এই দূর্যোগকালিন সময়ে ‘ফিডিং শপ’ এর মত ভূর্তুকি মূলক কার্যক্রমে সংশ্লীষ্ট অন্যান্য প্রতিষ্ঠানকেও খামারিদের সাহায্যার্থে এগিয়ে আসার আহবান জানান তিনি।
কোম্পানীর সাপ্লাই চেন এন্ড মিল্ক সোর্সিং বিভাগের বিভাগীয় প্রধান শাহ মোঃ সদরুদ্দিন শিবলী জানান, ‘ফিডিং শপ’ এর কার্যক্রম অদুর ভবিষ্যতেও চালু রাখার পরিকল্পনা করা হয়েছে। তাছাড়া চলমান করোনা মহামারির সময়ে নিবন্ধিত খামারির জন্য করোনায় আক্রান্ত হলে দুই মাস মেয়াদের ফ্রী হেলথ ইন্সুরেন্সের মাধ্যমে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত আর্থিক সহায়তা পাওয়ার নিবন্ধন প্রদান করা হয়েছে। এছাড়া দরিদ্র খামারিদের মাঝে এক মাসের খাদ্য সামগ্রী বিতরন করা হয়েছে। এছাড়াও খামারিদের টেকসই উন্নয়নের পরিকল্পনা স্বরূপ কিছুদিনের মধ্যেই ফিড প্রিজারভেশন টেকনিক নিয়ে বাস্তবমুখী পাইলটের মাধ্যমে খামারিদের হাতে কলম প্রশিক্ষন প্রদান করা হবে। যাতে করে খামারিরা নিজেরাই স্থানীয় সহজলভ্য ফোডার স্টাফ ব্যবহার করে আরো লাভজনক খামার পালন করতে পারবেন।