fbpx
বগুড়া জেলার সংবাদশিবগঞ্জ

নবান্ন উৎসব উপলক্ষে বগুড়ার ঐতিহাসিক মহাস্থান মাছ বাজারে মাছের মেলা অনুষ্ঠিত

বগুড়া সংবাদ ডটকম (মহাস্থান প্রতিনিধি এস আই সুমন) : নবান্ন উৎসব উপলক্ষে সোমবার বগুড়ার ঐতিহাসিক মহাস্থানে মাছ বাজারে মাছের মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রতি বছরের ন্যায় মহাস্থান মৎস্য আড়ৎদার সমবায় ও বহুমুখী সমিতির উদ্যোগে এ মাছের মেলার আয়োজন করা হয়। নবান্নের কথা বলতে গেলে প্রথমে উঠে আসে অগ্রহায়ণ মাসের কথা। মনে পড়ে বাংলা উৎসবের সাথে মিশে থাকা বাঙালির হাজার বছরের ইতিহাস, ঐহিত্য ও সংস্কৃতি। প্রাচীনকাল থেকেই বাঙালিয়ানার পরিচয় পাওয়া যায় এই নবান্ন উৎসবকে কেন্দ্র করে। অগ্রহায়ণের শুরু থেকেই আমাদের গ্রামবাংলায় চলে নানা উৎসব-আয়োজন। নতুন ধান কাটা আর সেই সাথে প্রথম ধানের অন্ন খাওয়াকে কেন্দ্র করে পালিত হয় এই উৎসব। বাঙালিদের বিচিত্র অনুষ্ঠান ও উৎসব পালিত হলেও নবান্ন তার মধ্যে অন্যতম। নবান্ন বাংলাদেশের মানুষের ঐতিহ্যবাহী শস্যোৎসব। এই নবান্ন উৎসবকে বাঙ্গালীদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে জাতীয় নবান্ন উৎসব ১৪২৬ উপলক্ষে বগুড়ার ঐতিহাসিক মহাস্থানহাটে বিরাট মৎস্য মেলার আয়োজন করা হয়। দুপুরে মহাস্থান মাছের মেলায় সরেজমিনেগিয়ে দেখা যায়, প্রায় ১ সপ্তাহ পূর্বে থেকে পুরোহাট সাজসজ্জায় সাজানো হয়েছে। ভোরবেলা থেকে আসতে শুরু করে কাতলা, চিতল, সিলভার র্কাপ, ব্লাডর্কাপ বিগহেড, চিতল, বোয়ালসহ বিরল প্রজাতির হরেক রকমের মাছ। চলছে হাঁকডাক, দরদাম। এক কেজি থেকে শুরু করে ২৬ কেজি ওজনের মাছ আছে। লোকজনও ব্যাপক উৎসাহের সঙ্গে কিনছেন এসব মাছ। নবান্ন উৎসবেকে ঘিরেই প্রতি বছর মাছের মেলা বসে মহাস্থান মাছ বাজারে। বিভিন্ন এলাকার মানুষের ঘরে ঘরে এ উৎসবের আমেজ যেনো অংশে পরিনত হয়েছে। পরিবারের অভিভাবকেরা তো কিনছেনই তার পরেও মেয়ে-জামাইসহ স্বজনদের বাড়িতে মাছ পৌছে দিতেও দেখা গেছে। বিশালাকৃতির একটি মাছ হাতের ওপর তুলে ক্রেতা আকর্ষণের চেষ্টা করছিলেন গোকুল ইউনিয়নের পলাশবাড়ী গ্রামের মাছ বিক্রেতা আব্দুর রশিদ। তিনি ২৫ কেজি ওজনের ব্লার্ডকার্প মাছটির দাম হাঁকেন ১৬ হাজার টাকা। ২০০ থেকে ৪০০ টাকা কেজি দরে বিগহেড ও সিলভার কার্প বিক্রি হচ্ছে। রুই ও কাতলা মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৬০০ টাকা কেজি দরে। ক্রেতাদের উপস্থিত ছিল চোখে পড়ার মতো। বগুড়া সদরের ভান্ডার পাইকার এলাকা থেকে এসে ওজন দরে ২৫০০ টাকায় বিগহেড মাছ কিনেছেন ভুট্র মিঞা। তার সাথে কথা বলে জানা যায়, গত বারের চেয়ে এবার মাছের দাম একটু কম এবং সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রয়েছে। এদিকে চন্ডিহারা গ্রামের শাহীন ইসলাম, নামুজা এলাকার সরিফুল ইসলাম, শ্যামল চন্দ্র সাড়ে ৪ কেজি ওজনের বিগহেড কিনেছেন ১৬৭৫ টাকা দিয়ে, দামের কথা জানতে চাইলে, দাম চড়া বলে তিনি অসন্তুষ্ট প্রকাশ করেন। মহাস্থান মাছ হাটের সার্বিক পরিস্থিতি জানতে আয়োজক কমিটির সভাপতি বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মোঃ হায়দার আলী ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আলিম, সহ-সভাপতি আলী হায়দার, ফিরোজ আলী, ইব্রাহীম হোসেন এর সাথে কথা বললে তারা জানান, প্রতি বারের তুলনায় এবার মাছের আমদানি মোটামোটা ভাল হয়েছে। আমরা মাছ বাজার সফল করতে প্রায় ১ সপ্তাহপূর্বে থেকে প্রচার প্রচারনা চালিয়েছি। কিন্তু মহাস্থানের এই মাছ বাজার মহাসড়ক সংলগ্ন হওয়ায় গোবিন্দগঞ্জ হাইওয়ে পুলিশ মহাসড়কে ভটভটি সহ বেশকিছু যানবাহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করায় আতঙ্কে অনেক মাছের গাড়ি এই হাটে প্রবেশ করতে পারেনি। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে থানা পুলিশ ও হাট পরিচালনা কমিটির পক্ষ থেকেও সার্বিক সহযোগিতা করেছেন বলে আয়োজক কমিটির সদস্যবৃন্দ জানান।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

19 − eighteen =

Back to top button
Close