ধুনটের বালু ব্যবসায়ীদের দাপটে ভাঙ্গন ঝুঁকিতে যমুনার তীর সংরক্ষন ও বণ্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ
বগুড়া সংবাদ ডট কম (ধুনট প্রতিনিধি ইমরান হোসেন ইমন) : বগুড়ার ধুনট উপজেলার ভান্ডারবাড়ী ইউনিয়নে যমুনা নদীর শহড়াবাড়ী ঘাট ও চুনিয়াপাড়া এলাকায় অবৈধ বালু ব্যবসায়ীদের দাপটে ভাঙ্গন ঝুঁকিতে পড়েছে যমুনা নদীর তীর সংরক্ষন প্রকল্প ও বণ্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ। এছাড়া প্রতিদিন শত শত বালু পরিবহনকারী ট্রাকের ধুলাবালিতে বিভিন্ন রোগ বালাইয়ে আক্রান্ত হচ্ছেন ভাঙ্গন কবলিত এলাকার হাজারো মানুষ। তবে এসব বিষয়ে অভিযোগ করেও কোন প্রতিকার পাচ্ছেন না তারা। স্থানীয়সূত্রে জানাযায়, ধুনট উপজেলার ভান্ডারবাড়ী ইউনিয়নের পূর্ব পাশ দিয়ে বয়ে গেছে যমুনা নদী। প্রতিবছর নদী ভাঙনের কারণে হাজার হাজার একর আবাদি জমি ও শত শত পরিবারের বাড়িঘর ভাঙনের কবলে পড়ে বিলীন হয়েছে। এ কারণে যমুনার ভাঙন ঠেকাতে ভান্ডারবাড়ী ইউনিয়নের শহড়াবাড়ী ঘাট এলাকা থেকে ভুতবাড়ী গ্রাম পর্যন্ত প্রায় শত কোটি টাকা ব্যায়ে নদীর ডান তীর সংরক্ষণ প্রকল্প ও বণ্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ নির্মান করেছে বগুড়া পানি উন্নয়ন বোর্ড। ওই প্রকল্পের শহড়াবাড়ী ঘাটের দক্ষিন পাশে যমুনায় ড্রেজার বসিয়ে অবৈধভাবে প্রায় ২ কোটি টাকার বালু উত্তোলন করেন ভান্ডারবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য হযরত আলী ও ভান্ডারবাড়ী ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহমুদুল আলম। বালু উত্তোলনের কারনে যমুনা নদীর তীর সংরক্ষন প্রকল্পের বিভিন্ন স্থানে ডেবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এসংক্রান্ত একটি সংবাদ বিভিন্ন জাতীয় ও স্থানীয় দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশের পর গত দুই মাস আগে ধুনট উপজেলা কমিশনার (ভূমি) জিন্নাত রেহেনা ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে ওই বালু নিলামের ঘোষনা করেন। পরে বগুড়া জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত নিলামে অংশ নিয়ে ২ কোটি টাকার বালু মাত্র ১০ লাখ টাকা ক্রয় করেন হয়রত আলী ও মাহমুদুল। সেই বালু প্রতি ট্রাক বিক্রি করছেন ৮শ থেকে ৯শ টাকায়। এদিকে প্রতিদিন শত শত বালু ভর্তি ট্রাক তীর সংরক্ষন প্রকল্প ও বণ্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধের ওপর দিয়ে চলাচল করছে। এতে ধীরে ধীরে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে সরকারের শত কোটি টাকা ব্যায়ে নির্মিত যমুনা নদীর ডান তীর সংরক্ষন প্রকল্প ও বাঁধ। শুধু হযরত আলী ও মাহমুদুলই নয় তাদের মতো একইভাবে প্রায় ২ কোটি টাকার বালু উত্তোলন করে বিক্রি করছেন চুনিয়াপাড়াগ্রামের কাদের মন্ডলের ছেলে ও ভান্ডারবাড়ী ইউনিয়ন যুবলীগের সহ-সভাপতি সুমন মন্ডল। তিনিও সরকারি প্রকল্পের ক্ষতি করে বালু ব্যবসা করে যাচ্ছেন। চুনিয়াপাড়া গ্রামের জামাল হোসেন, চাঁন মিয়া ও আব্দুস সামাদ জানান, প্রতিদিন শত শত বালু ভর্তি ট্রাক চলাচল করায় যমুনা নদীর ডান তীর সংরক্ষন প্রকল্প ও বণ্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ হুমকির মুখে পড়েছে। এছাড়া বালু পরিবহনকারী ট্রাকের ধুলাবালিতে এলাকাবাসী বিভিন্ন রোগ বালাইয়ে আক্রান্ত হচ্ছে। তাছাড়া পাকা ও কাঁচা সড়ক ভেঙ্গে যাওয়ায় জনসাধারনের ভোগান্তি দিন দিন বেড়েই চলেছে। এসব বিষয়ে অভিযোগ করেও কোন প্রতিকার মিলছে না। তবে বালু ব্যবসায়ী হযরত আলী ও সুমন মন্ডল জানান, সব কিছু ম্যানেজ করেই বালু ব্যবসা করে যাচ্ছেন। এতে কোন ক্ষতি হচ্ছে না বলে দাবি করেন তারা। এবিষয়ে ধুনট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাজিয়া সুলতানা বলেন, অবৈধ বালু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। বালু ব্যবসায়ীদের কারনে সরকারি কোন প্রকল্পের ক্ষতি হলে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।