আদমদীঘিতে পোকা দমনে আলোক ফাঁদ
বগুড়া সংবাদ ডট কম (আদমদীঘি প্রতিনিধি সাগর খান) : বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলায় চলতি আমন মৌসুমে পোকা মাকড়ের ক্ষতির হাত থেকে ফসল রক্ষায় কিটনাশকের পরিবর্তে কৃষকদের আলোক ফাঁদ ব্যবহারে উৎসাহিত করছে স্থানীয় উপজেলা কৃষি বিভাগ। ধান ক্ষেতে আলোক ফাঁদ ব্যবহার করে ক্ষতি কারক শত্রু পোকা নির্ণয় যায়। এছাড়া এই আলোক ফাঁদে যেসব উপকারী বন্ধু পোকা রয়েছে তাও নির্ণয় করা যায়। রাতের বেলায় ধান ক্ষেতের পার্শ্বে টাঙানো হয় বৈদ্যুতিক বাল্ব। বাল্বের নিচে ডিটারজেন্ট বা কেরোসিন মিশ্রিত একটি পানির পাত্র রাখা হয়। আর এই বাল্বের আলোয় আকৃষ্ট হয়ে পোকা মাকড়গুলো আলোর কাছে আসে এবং পাত্রের পানির মধ্যে পড়ে মারা যায়। পাত্রের ওইসব পোকামাকড় দেখে ক্ষতিকর পোকা মাকড়ের উপস্থিতি নির্ণয় করে তা প্রতিরোধের পরামর্শ দিয়ে থাকে। ক্ষেতে মাজরা পোকা, বাদামী গাছ ফড়িং ও বিভিন্ন ধরনের ক্ষতিকর পোকা আক্রমণ করে থাকে। এর মধ্যে বাদামি গাছ ফড়িং বা কারেন্ট পোকা সবচেয়ে বেশি ক্ষতি কারক। এই পোকা যে ধান গাছে আক্রমণ করে সেই গাছের শীষ সম্পূর্ণ রুপে নষ্ট হওয়ার ফলে ধানের ফলনও কম হয়। কৃষি বিভাগের তথ্য ও গবেষণা বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ধান চাষে কিটনাশক ব্যবহার করে কৃষকেরা তেমন কোনো সুবিধা পান না বরং উৎপাদন ব্যয় বাড়ে আর এর পাশাপাশি পরিবেশও দূষিত হয়। এ ক্ষেত্রে আলোক ফাঁদের কোন বিকল্প নেই। এতে খরচও কম এবং পরিবেশ বান্ধব। জানা যায়, গত বুধবার রাতে আদমদীঘি উপজেলা কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে উপজেলার সদর ইউনিয়নের শিবপুর গ্রামের কৃষকদের নিয়ে পোকা মাকড় দমন ও আলোক ফাঁদ ব্যবহারে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। চলতি আমন মৌসুমে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মিঠু চন্দ্র অধিকারীর নেতৃত্বে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মিজানুর রহমান, শাহ আলম ও উপ-সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম সহ কর্মকর্তারা বিভিন্ন স্থানে কৃষকদের ধানক্ষেতে আলোক ফাঁদ স্থাপন করা সহ সভা সেমিনারের মাধ্যমে কৃষকদের ব্যাপক উদ্বুদ্ধ করে যাচ্ছেন। এতে এলাকার কৃষকরা আলোক ফাঁদ ব্যবহার করে বেশ উপকৃতও হচ্ছে। এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মিঠু চন্দ্র অধিকারী বলেন, উপজেলার ৬টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় মোট১৯ টি ব্লকে সংশ্লিষ্ট উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের মাধ্যমে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করতে প্রতিদিনই আলোক ফাঁদ স্থাপন করা হচ্ছে। পোকা মাকড়ের ক্ষতির হাত থেকে ফসল রক্ষায় কিটনাশকের ব্যবহার কমাতে এবং পরিবেশবান্ধব আলোক ফাঁদ স্থাপনে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করণে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কাজ করে যাচ্ছে। এ পদ্ধতি ব্যবহারে করে কৃষকরা একদিকে যেমন তাদে উৎপাদন খরচ কমবে অপর দিকে ধানের ফলনও বৃদ্ধি পাবে।