পৈত্রিক সম্পত্তির ক্ষতিপূরণের অর্থ জালিয়াত চক্রকে না দিতে ভুক্তভোগী সাত বোনের সংবাদ সম্মেলন
বগুড়াঃ জাল কাগজপত্র দিয়ে জেলা প্রশাসনকে বোকা বানিয়ে ভূমি অধিগ্রহণের অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে বগুড়া সদর উপজেলার গোকুল এলাকার একটি ভূমি জালিয়াতি চক্র। ওই ভূমি জালিয়াত চক্র যাতে অধিগ্রহণের ক্ষতিপুরনের অর্থ উত্তোলন করতে না পারে সেজন্য বগুড়া জেলা প্রশাসকের নিকট আকুল আবেদন জানিয়েছেন ভুক্তভোগী এক পরিবারের সাত বোন। ২৮ আগস্ট শনিবার বগুড়া প্রেসক্লাবে এসে তারা সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ আবেদন জানান।
গোকুল মধ্যপাড়ার মৃত হাফিজার রহমানের সাত কন্যা যথাক্রমে আঞ্জুয়ারা বিবি, হাসিনা বিবি, আফরোজা বেগম, পপি খাতুন, চায়না বিবি, লিপি খাতুন ও ববিতা খাতুন সংবাদ সম্মেলন বলেন, ওই ভূমি জালিয়াত চক্র জাল কাগজ দিয়ে জেলা প্রশাসনকে বোকা বানিয়ে তাদের পিতা মৃত হাফিজার রহমানের মালিকানাধীন গোকুল মৌজার ১১৯১ দাগের ক্ষতি পুরনের অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে। বর্তমানে ১১৯০ দাগের ক্ষতিপুরনের অর্থ উত্তোলন করতে জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে ওই সাত বোন আরো বলেন, সম্প্রতি বগুড়া-রংপুর মহাসড়ক চার লেনে উন্নিতকরণের লক্ষ্যে গোকুল মৌজার ১১৯১ ও ১১৯০ দাগের সাড়ে ১২ শতক সম্পত্তি অধিগ্রহন করা হয়। উক্ত সম্পত্তি সিএস মালিক ছিলেন বহর উল্ল্যাহ প্রামাণিক। তাঁর মৃত্যুর পর দুই পুত্র হায়দার আলী ও রমজান আলী ওয়ারিশ নিযুক্ত হয়। ৩০/১২/১৯৭৬ সালে হায়দার আলী উক্ত দুই দাগের সাড়ে সাত শতক সম্পত্তিসহ অন্যান্য দাগের মোট সোয়া ২৫ শতক সম্পত্তি তাহার একমাত্র পুত্র হাফিজার রহমান বরাবর হস্তান্তর করেন। হাফিজার রহমানের পুত্র সন্তান না থাকায় নিকটাত্মীয় রমজান আলীর ছেলে বিইউএম গোলাম রব্বানী ও আজিজুর রহমানের ছেলে এস এম রাজিবুল ইসলাম রাবু অন্য কাউকে হাফিজার রহমান সাজাইয়া ১৯৮১ সালে ১৭৬০৪ নং একটি কবলা রেজিষ্ট্রি দলিল সৃষ্টি করিয়া গোপন করে রাখে। সম্প্রতি উক্ত সম্পত্তি সরকার অধিগ্রহন করায় জাল খতিয়ান ও জাল দলিল এবং জাল খাজনার দাখিলা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে উপস্থাপন করে ১১৯১ দাগের ক্ষতিপুরণের অর্থ উত্তোল করিয়াছে। বর্তমানে উক্ত রমজান আলীর ছেলে বিইউএম গোলাম রব্বানী ও আজিজুর রহমানের ছেলে এস এম রাজিবুল ইসলাম রাবু একইভাবে উক্ত জাল কাগজপত্র জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে উপস্থাপন করে ১১৯০ দাগের ক্ষতিপুরণের অর্থ উত্তোলনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এ বিষয়ে জেলা বগুড়ার ১ম সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে উক্ত জাল দলিল বাতিলের জন্য ৪৮৫/২০২১ (অন্য) নং মোকদ্দমা দায়ের করেন ওই সাত বোন। আদালত নিষেধাজ্ঞার দরখাস্ত শুনানী শেষে উক্ত দুই ব্যক্তিকে যাতে ক্ষতিপুরণের অর্থ প্রদান করা না হয়, এজন্য বগুড়া জেলা প্রশাসক, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) ও ভূমি অধিগ্রহন কর্মকর্তা, বগুড়াকে সাত দিনের কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করেছেন। জাল কাগজপত্রের বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তারা বলেন, ওই জালিয়াত চক্র টাকা উত্তোলনের জন্য বগুড়া ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তার নিকট দাখিলকৃত খাজনার দাখিলা, এসএ খতিয়ান এবং দলিল দাখিল বিষয়ে সংশ্লিষ্ট অফিসগুলোতে গিয়ে তারা ওই সব কাগজের কোন অস্তিত্ব খুঁজে পাননি।